ওয়েব ডেস্ক: হিন্দু শাস্ত্রে (Hindu Mythology) মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত রয়েছেন যে দেবতা, তিনি হলেন যমরাজ। সেই কারণে বছরের বিভিন্ন সময় নানা দেবদেবীর পুজো হলেও যমরাজের পুজো (Yamraaz Puja) খুব একটা দেখা যায় না। তবে শীতের শুরুতে মালদহ (Malda) গেলেই আপনার চোখে পড়বে এই বিরল পুজোর আয়োজন। মালদহ শহরের নেতাজি সুভাষ রোডে রূপকথা সিনেমা হলের পাশে প্রতি বছর হয় যমরাজের পুজো। প্রায় ১৮০ বছর ধরে চলে আসছে এই বিশেষ পুজো, যা এখনও দেখা যায় না বাংলার অন্য কোথাও।
মালদহে যমরাজের এই পুজো হয় আদি কংস বণিক কালীবাড়ি প্রাঙ্গণে। কার্তিক পুজোর পরের দিনই এই ব্যতিক্রমী দেবতার আরাধনা শুরু হয় সেখানে। শুধু যমরাজ নয় কালীবাড়িতে একইসঙ্গে পুজো হয় তাঁর সচিব চিত্রগুপ্তের, যিনি পুরাণ মতে মানুষের জীবনের পাপ-পুণ্যের হিসাব রাখেন।
আরও পড়ুন: আনুমানিক ৪০০ বছরের প্রাচীন শান্তিপুরের আগমেশ্বরী মা
পুরাণে বলা হয়েছে, মৃত্যুর পর যমপুরীতে মানুষের বিচার হয়। বিচার করেন যমরাজ এবং পাপ-পুণ্যের হিসাব রেখে সেগুলিকে যমলোকের সম্রাটের সামনে আনেন চিত্রগুপ্ত। এই বিশ্বাস থেকেই স্থানীয় মানুষের ধারণা, যমরাজের পুজো করলে মৃত্যুর পর যমদণ্ড কিছুটা লাঘব হয়। তাই কংস বণিক সম্প্রদায়ের পাশাপাশি আশপাশের এলাকার বহু মানুষও এই পুজোয় যোগ দেন।
মন্দির কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, একসময় পুজোর সঙ্গে সঙ্গে ‘যমালয়’ তৈরি করা হত, সেখানে নানা দৃশ্যে দেখানো হত পাপীদের ওপর যমরাজের শাস্তি। যমদূত, নরকযন্ত্রণা, বিচারসভা— সবকিছু মূর্তি ও সাজসজ্জার মাধ্যমে জীবন্ত হয়ে উঠত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। এখন আর সেই আড়ম্বর নেই, পুজো সীমিত হয়েছে ধর্মীয় আচারেই।
জৌলুশ কমলেও আজও টিকে রয়েছে যমরাজ পুজোর ঐতিহ্য। প্রতি বছর কার্তিক পূর্ণিমার পরের দিন মালদহের মানুষ ভিড় করেন এই অনন্য পুজোয়। এক সদস্যের কথায়, “আমাদের জানা মতে, পশ্চিমবঙ্গে আর কোথাও যমরাজের পুজো হয় না। এটা মালদহেরই গর্ব।”
দেখুন আরও খবর:







